দুর্বাচারা আমার নিজ গ্রাম:কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলার প্রত্যন্ত দুর্বাচারা গ্রামটিই আমার পৈতৃক নিবাস; আমার আদি পূর্ব পুরুষদের বসবাস এই দুর্বাচারাতেই । কুষ্টিয়া শহরের কেন্দ্রবিন্দু থেকে সদর উপজেলার দুর্বাচারা গ্রামটি ১২ কিমি দুরে অবস্থিত। গ্রামের পশ্চিমে রয়েছে আদিগন্ত ব্স্তিৃত সবুজ শ্যামলিমায় ঢাকা ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়ারূপী চিরায়ত বাংলার অপরূপ শোভা ; পূর্বে গড়াই নদীর শাখা কালিনদী, যা অনেক আগেই তার রূপ সৌ্ন্দর্য্য ও প্রমত্ততা হারিয়ে এখন কোনমত কায়ক্লেশে বেঁচে আছে। নদী বিধৌত পলল এই ভূমিতে এক সময় সবুজ দুর্বা ঘাসের আধিক্য থেকেই এই গ্রামের নাম হয়েছে দুর্বাচারা । ইতিহাসের ঠিকুজি ঘেঁটে জানা যায়, বেশ বড় অবয়বের এই গ্রামটিতে বরাবরই হিন্দু মুসলমান সবাই একটা চমৎকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেল বন্ধন রচনা করে বসবাস করে আসছে সেই আদিকাল থেকে।
মুক্তি সংগ্রামে এই দুর্বাচারা গ্রামের বীর সেনানীদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা আজো চোখের সামনে ভেসে ওঠে। দুর্বাচারা মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ ঘাঁটি ও অপ্রতিরোধ্য ক্ষিপ্রতায় সন্মুখ সমর ও গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে এই গ্রামের বীর সেনানীদের অনবদ্য ভূমিকা ছিল।
দুর্বাচারা শেখপাড়া জামে মসজিদ, সদর, কুষ্টিয়া: দুর্বাচারা একটা বেশ বড় গ্রাম, তার মধ্যে দুর্বাচারা শেখাপাড়াতে কয়েকশত মুসলামান পরিবারের বসবাস।কিন্তু দুঃখের বিষয় দুর্বাচারা গ্রামের শেখপাড়াতে কোন মসজিদ নেই; এদের নামাজের জন্যে একটা মাত্র মসজিদ আছে তাহলো “দুর্বাচারা বাজার জামে মসজিদ”, যে মসজিদটি নির্মাণের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন আমার বাবা মরহুম শেখ মুনসুর আলী। জুম্মার দিনে এবং রমজান মাসে তারাবীর নামাজে এই দুর্বাচারা বাজার জামে মসজিদে, আলহামদুল্লিাহ এখন অধিক সংখ্যক মুসুল্লীর সমাবেশ হওয়ার প্রেক্ষিতে অনেক সময় সেখানে স্থানাভাবে ভালভাবে নামাজ পড়তে বেশ কষ্ট হয়, তাছাড়া এই মসজিদটির চারদিকে বড় বড় দোকানপাট হওয়াতে মসজিদটি তার নান্দনিকতা হারায় অনেকখানি। ফলে শেখপাড়াতে একটা মসজিদ নির্মাণের যৌক্তিকতা অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে। এহেন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বাড়ির আঙিনায় জি.কে সেচ ক্যানেলের পাশে একটা জামে মসজিদ নির্মানের প্রাথমিক উদ্যোগ গ্রহণ করে, আমার সহোদর ছোটভাই তথ্য প্রযুক্তিবিদ শেখ মো. কামরুজ্জামান ওরফে আমিরুল; জমি দান করেন আমার একমাত্র চাচা। বলতে দ্বিধা নেই কয়েক বছর আগে আমার এই ভাইটি নিয়মিত নামাজ পড়া তো দুরে থাক, ধর্মকর্মেও তেমন একটা বিশ্বাসী ছিল না। অথচ মহান আল্লাহপাক কী না পারেন, এই মানুষটির হাত দিয়েই নবনির্মিত “শেখপাড়া জামে মসজিদ” এর সোপান রচিত করালেন এবং আল্লাহপাকের রহমতে নজিরবিহীন দ্রুততার মধ্যে আমরা “শেখপাড়া জামে মসজিদ” কে একটা পূর্ণাঙ্গ রূপায়ন করতে সক্ষম হয়েছি।
এক নজরে দুর্বাচারা শেখপাড়া জামে মসজিদ (সদর, কুষ্টিয়া) নির্মাণের ইতিবৃত্ত:
# বিগত ২১ অক্টোবর, ২০১৫ খ্রি. মসজিদের নামে সাফ কবলায় দলিল করে ৫ শতাংশ জমিদান করেন আমার একমাত্র চাচা শেখ মাহতাব আলী।
# মাটি ভরাট শেষে বিগত ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬ খ্রি. তারিখ শুক্রবার ,আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে মসজিদ নির্মাণের মূল কার্যক্রম শুরু করা হলো।
# প্রাথমিকভাবে মসজিদ নির্মাণে অর্থের যোগানদাতা ছিলাম আমরা দু’ভাই; পরে অবশ্য অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের মসজিদ ফাণ্ডে অনেক টাকা জমা পড়তে থাকে। এলাকাবাসীরাও তাদের সক্রিয় সহযোগিতার হাত বাড়ায়। আমাদের লক্ষ্য ছিল কারুর কাছ থেকে কোন ধরনের টাকা পয়সা না পেলেও আমরা নিজেরাই পারিবারিকভাবে মোটামুটি নামাজ পড়ার মত একটা মসজিদ তৈরি করবো। সত্যি কথা বলতে টাকার অভাবে একটা দিনের জন্যেও আমাদের কোন কাজ বন্ধ থাকেনি। অবশেষে প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যায়ে চমৎকার একটা দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নির্মাণ সম্ভব হয়েছে।
# আবারো মহান আল্লারপাকের অসীম কুদরতে ও গায়েবী সহায়তায় অপ্রত্যশিতভাবে বিগত ০৩.০৬.২০১৬ খ্রি. তারিখে জুম্মার নামাজের মাধ্যমে মসজিদের শুভ উদ্ভোধন করা হয় এবং ০৬.০৬.২০১৬ খ্রি. তারিখ থেকে যথারীতি খতম তারাবী চলতে থাকে। উদ্বোধনী দিনে মসজিদে মুসুল্লী দিয়ে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। সেই থেকে আশাতীত সংখ্যক মুসল্লী নিয়মিত নামাজ আদায় করছেন। সবচে বড় সফলতা হলো এলাকার মানুষজন গোষ্ঠীগত বিভেদ ভুলে গিয়ে এবং নিজেদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব সংঘাতকে পাশ কাটিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নামাজ আদায় করেছেন ফলে মসজিদটি শুরুতেই সামাজিক সম্প্রীতির এক অনন্য নমুনা প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে।
# বিগত ১৪ অক্টোবর(২০১৬খ্রি.) তারিখে আমাদের মসজিদের প্রাথমিক পর্বের কাজটুকু সফলভাবে সম্পন্ন করার পরে মসজিদের ভেতর বাইরের নান্দনিকতা বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণে।
# এক নজরে শেখপাড়া জামে মসজিদ: মসজিদের ভেতর বাইরে তাকালে চোখে পড়বে: চমৎকার সফেদ রং, থাই গ্লাসের ১০টা জানালা, ৩ টা দরজা, জিপসাম বোর্ডের সিলিং, সাদা রংয়ের ফ্লোর টাইলস, অত্যাধুনিক সাউণ্ড সিস্টেম, ১২টি বিআরবি ৫৬ ইঞ্চি বৈদ্যুতিক পাখা, ১০ টি এলইডি টিউব লাইট, ২টি ডিজিটাল ঘড়ি, একটা নামাজের সময়সূচক ঘড়ি, পর্যাপ্ত কোরান হাদিস ও তাফসিরের বই, দুইটি ওয়াল ক্যাবিনেট, ৬ কাতার মখমলের রানিং জায়নামাজ, শক্তিশালী জেনারেটর, টাইলস বসানো টয়লেট, প্রস্রাবখানা ও ওজুখানা; ওজুখানার উপরে টিনের ছাদ, পানির পাম্প, টিউবওয়েল, গ্রীল ঘেরা বারান্দা ইত্যাদি। যারা আগে আমাদের মসজিদের এই জায়গাটি বছর দেড়েক আগে দেখেছেন তাদের কাছে এখন অবিশ্বাস্য মনে হয় যে, এতটা কম সময়ের মধ্যে এমন অভাবনীয় কাজ হলো কী করে?
# প্রাথমিক ভাবে আমরা একটা সাদামাটা মসজিদ নির্মাণ করলেও আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মাঝে রয়েছে: মসজিদের জন্যে বহুতল ভবন নির্মাণ, হেফজখানা ও কোরআন শিক্ষার আসর পরিচালনা, মহিলাদের পৃথক নামাজের ব্যবস্থাকরণ ইত্যাদি। সর্বোপরি ইসলাম শান্তির ধর্ম, শ্রেষ্ঠ ধর্ম্ম, মানবতার ধর্ম্ম, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির ধর্ম্ম, এসব অমীয় বাণী প্রচার করতে চাই আমাদের এই মসজিদকে কেন্দ্র করে। ইন শা আল্লাহ সময়ে সবকিছু সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়ে যাবে।
# “মসজিদ” শব্দের অর্থ সেজদা করার স্থান ( مسجد )। মসজিদ মুসলমানদের দলবদ্ধভাবে নামাজ পড়ার জন্য নির্মিত স্থাপনা। যার আভিধানিক অর্থ শ্রদ্ধাভরে মাথা অবনত করা অর্থাৎ সিজদাহ করা। “মসজিদ” মুসলমানদের বিভিন্ন ধর্মীয় কার্যাবলীর প্রাণকেন্দ্র। পবিত্র “মসজিদ” আল্লার ঘর। এই পৃথিবীতে সর্ব প্রথম যে মসজিদ ঘরটি নির্মিত হয়েছে তাহলো কাবা ঘর। হযরত আদম (আ:) ছালাম পৃথিবীতে আগমনের পরে ইবাদতের জন্যে যে ঘরটি প্রথম নির্মাণ করেন তাহলো কাবা ঘর। পবিত্র কাবা ঘরের আলোকে পৃথিবীতে গড়ে উঠেছে অসংখ্য মসজিদ। মসজিদ মুসলমানদের জন্যে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কর্মকাণ্ডের কর্মস্থল, পবিত্র স্থান, শান্তির ঘর, অন্যতম ইবাদতখানা। পৃথিবীর যেখানে মসজিদ স্থাপিত হয়েছে সেটাই হলো কাবা ঘরের অংশ। মসজিদ বিনির্মাণ সদকায়ে জারিয়া ।
# ‘কুল্লু নাফসিন জাইকাতুল মওত’ অর্থাৎ প্রত্যেক প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে, তাই আপনি আমি কেউ একদিন বেঁচে থাকবো না। আমরা মুসলমান, পরকালে বিশ্বাস করি, আল্লার কাছে ভাল কাজের যেমন পুরস্কার আছে, তেমনি আছে মন্দ কাজের তিরস্কার ও শাস্তি। আমরা মানুষ আমাদের অহরহ ভুল ক্রটি হচ্ছে, জেনে না জেনে, প্রলোভনে পড়ে আমরা প্রতিদিন কতই না পাপ কাজ করে চলেছি, তাই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যদি তাঁর নিজ করুণায় আমাদের হেফাজত না করেন, তাহলে আমাদের জন্যে নাজাত লাভ অসম্ভব। কিছু ভাল কাজের বিনিময়ে যদি আমরা পরকালে নাজাত পেতে পারি সেজন্যে আমাদের কিছু ভাল কাজ করা উচিৎ। তেমনি একটা ভাল কাজের অন্যতম হলো মসজিদ নির্মাণ। টাকা পয়সা আসবে যাবে, আজকে অনেক টাকার বাদশাহী আছে তো কালকে নিঃসম্বল করে করে দিতে পারেন মহান আল্লাহতালা, তাই আমরা যদি প্রত্যেকে কায়মনে চেষ্টা করি তাহলে কোন মহল্লাতে একটা আল্লার ঘর তৈরী করে সেটাকে আবাদী রাখা মোটেও কোন কঠিন কাজ নয়। আর নিয়ত ভাল থাকলে আল্লাহ পাকের ঘর মসজিদ নির্মাণে আল্লার পক্ষ হতে সহায়তা পাওয়া যায়। আমরা সেটা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছি।
# মানসিকভাবে আমি এবং আমার ছোটভাই এজেন্য খুশি যে, আমাদের জীবদ্দশায় একটা ভাল কাজ করতে পেরেছি। আমাদের জন্যে দোয়া করবেন।
# আমাদের এই মসজিদের নামে একটা পৃথম ওয়েবসাইট (www.skmasjid.org) রয়েছে, আপনার সেখানে গেলে এই মসজিদ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য উপাত্ত জানতে পারবেন।
আমার নিজ জিলা কুষ্টিয়া:সাহিত্য ও সংস্কৃতির রাজধানী হিসেবে পরিচিত কুষ্টিয়া জেলার উত্তর পশ্চিম এবং উত্তরে পদ্মা নদীর অপর তীরে রাজশাহী, নাটোর ও পাবনা জেলা, দক্ষিণে ঝিনাইদহ জেলা, পশ্চিমে মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলা এবং ভারতের নদীয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলা এবং পূর্বে রাজবাড়ী জেলা অবস্থিত। ভারতের সাথে কুষ্টিয়ার ৪৬.৬৯ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা আছে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত এই কুষ্টিয়া শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে বাংলাদেশকে করেছে সমৃদ্ধ। এছাড়াও বিষাদ সিন্ধুর রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেন এবং বাউল সম্রাট লালনের তীর্থভূমি, পুরাতন কুষ্টিয়া হাটশ হরিপুর গ্রামে গীতিকার, সুরকার ও কবি আজিজুর রহমানের বাস্ত্তভিটা ও কবর, এ জনপদে জন্মগ্রহণকারী বিশিষ্ট কবি দাদ আলী, লেখিকা মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা, ‘‘এই পদ্মা এই মেঘনা’’ গানের রচয়িতা আবু জাফর, কুষ্টিয়ার সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠাতা কাঙাল হরিণাথ, নীল বিদ্রোহের নেত্রী প্যারী সুন্দরী, স্বদেশী আন্দোলনের নেতা বাঘা যতিন, প্রয়াত প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী, প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পী মোঃ আব্দুল জববার, ফরিদা পারভীনসহ অসংখ্য গুণীজনের পীঠস্থান কুষ্টিয়াকে সমৃদ্ধ করেছে।
- অবস্থান:
23.8907° N, 89.1099° E - সীমানা:
উত্তরে:পাবনা, নাটোর এবং রাজশাহী জেলা; দক্ষিনে: ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা;পুর্বে: রাজবাড়ী জেলা,পশ্চিমে: চুয়াডাঙ্গা,মেহেরপুর ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ - আয়তন:
১৬৮২.২৮ বর্গ কিলোমিটার। - লোকসংখ্যা:
১৬ লাখের মত। - আয়তন:
১৬৮২.২৮ বর্গ কিলোমিটার। - পৌরসভা:
- কুষ্টিয়া, কুমারখালী, খোকসা, ভেড়ামারা, মিরপুর।
- কুষ্টিয়া জেলার মোট জমি:১.৬৮.২২৮ হেক্টর।
- প্রধান ফসল:
- ধান, গম, ইক্ষু, পাট, তুলা, সুর্যমুখি, ভুট্টা, তামাক ইত্যাদি।
- বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান:
- কুষ্টিয়া সুগার মিলস লিমিটেড, কুষ্টিয়া টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, নর্দান জুট ম্যাঃ কোং, রেনউইক এন্ড যজ্ঞেশ্বর ইঞ্জিনিয়ারিং কোং, মোহীনি মিলস লিঃ ১৯৮২ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারী বিএনপি (রাষ্ট্রপতি জাস্টিস আব্দুস সাত্তার ) এর আমল থেকে বন্ধ, বি আর বি কেবল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ, এম আর এস ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড, কিয়াম মেটাল ইন্ডাঃ লিঃ, নর্থ বেঙ্গল প্লাস্টিক ইন্ডাঃ লিঃ, পারফেক্ট টোবাকো কোং লিঃ, বি এ টি সি লিঃ, নাসির টোবাকো ইন্ডাঃ লিঃ, শিলাইদহ ডেইরী, ইষ্ট ওয়েষ্ট কেমিক্যালস লিঃ, ইষ্টার্ন ফেব্রিক্স ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ, বুলবুল টেক্সটাইল লিঃ, হ্যান্ডলুম প্রসেসিং সেন্টার, রানা টেক্সটাইল লিঃ, রশিদ মিনারেল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ, মডার্ন টেক্সটাইল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ।
- প্রধান নদী:
- পদ্মা, গড়াই, হিসনা, ডাকুয়া, সাগরখালী, চন্দনা, কালীগঙ্গা ।
- বৃহৎ প্রকল্প:
- গঙ্গা কপোতাক্ষ প্রকল্প(এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প), বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ১ টি ।
- ঐতিহাসিক স্থানসমুহ:
- (১) কবিগুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত শিলাইদহের কুঠিবাড়ী।
- (২) ছেঁউড়িয়াস্থ বাউল সম্রাট লালন শাহর মাজার।
- (৩) লাহিনীপাড়ায় বিষাদসিন্ধুর লেখক সুসাহিত্যিক মীর মোশাররফ হোসেনের বাস্তভিটা।
- (৪) ঝাউদিয়ার শাহী মসজিদ।
- (৫) হার্ডিঞ্জ ব্রীজ।
- (৬) গড়াই ব্রীজ রেলপথ।
- (৭) মথুরানাথ প্রেস (কাঙ্গাল কুঠির)
- (৮) লালন শাহ সেতু।
- (৯) গড়াই সেতু সড়ক।
- কুষ্ঠিয়া জেলার ইউনিয়ন সমুহ :
- সদর উপজেলা :১: হরিনারায়নপুর, উজানগ্রাম, আলামপুর, মনোহরদিয়া, আব্দালপুর, ঝাউদিয়া, জগতি, আইলচারা,
- গোস্বামী দুর্গাপুর, পাটিকাবাড়ি, মজমপুর, হাটশ হরিপুর, বারখাদা, জিয়ারখী।
দৌলতপুর দৌলতপুর :২:রামকৃষ্ণপুর, প্রাগপুর, মথুরাপুর, চিলমারী, বোয়ালিয়া, আদাবাড়িয়া, খলিশাকুন্ডি, আড়িয়া, ফিলিপ নগর, দৌলতপুর, হোগলবাড়ীয়া, পিয়ারপুর, মরিচা, রিফাইতপুর।
মিরপুর উপজেলা :৩:চিথলিয়া, বহলবাড়িয়া, তালবাড়িয়া, বারুইপাড়া, আমলা, সদরপুর ছাতিয়ান, পোড়াদহ, কুর্ষা, মালিদহ, আমবাড়ীয়া, মিরপুর পৌরসভা, ফুল বাড়ীয়া।
কুমারখালী উপজেলা:৪:যদুবয়রা, পান্টি, চাদপুর, বাগুলাট, সাদকি, জগন্নাথপুর, কয়া, নন্দিলালপুর,শিলাইদহ,চাপড়া,কুমারখালী পৌরসভা। - ভেড়ামারা উপজেলা:৫:বাহাদুরপুর, বাহিরচর, মোকারিমপুর, ধরমপুর, জুনিয়াদহ, চাদগ্রাম, ভেড়ামারা পৌরসভা।
- খোকসা উপজেলা:৬:খোকসা, সমসপুর, জানিপুর, আমবাড়ী, গোপালগঞ্জ, জয়ন্তহাজরা, ওসমানপুর, বেতবাড়ীয়া, শিমুলিয়া, খোকসা পৌরসভা।
- কুষ্টিয়ার দুটো ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান:
- (১) বাউল সম্রাট লালন ও লালন ফকিরের মাজার: ফকির লালন শাহ বা লালন ফকির (১৭৭৪- অক্টোবর ১৭, ১৮৯০) ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী আধ্যাত্মিক সাধকদের মধ্যে অন্যতম। তিনি একাধারে ফকির বা মুসলমান সাধক, দার্শনিক, অসাধারণ গীতিকার, সুরকার ও গায়ক। গান্ধীজীরও ২৫ বছর আগে, ভারত উপমহাদেশে সর্বপ্রথম, তাঁকেই ‘মহাত্মা’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছিল। প্রায় নিরক্ষর এই মানুষটি ছিলেন বিরল প্রতিভা ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের অধিকারী। লালনকে বাউল গানের অগ্রদূতদের অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।জন্ম পরিচয় ধর্ম্ম গোত্র কোন কিছুর ব্যাপারেই লালন সম্পর্কে খুব বেশী তথ্য পাওয়া যায়না।লালনের জন্ম কোথায় তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। লালন নিজে কখনো তা প্রকাশ করেননি; তিনি নিজেই নিজেকে রহস্যাবৃত করে ইহধাম ত্যাগ করেছেন সোয়া শতাব্দীরও অধিক আগে। প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, লালন ১৭৭৪ খ্রিষ্টাব্দে ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ড উপজেলার হারিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কোনো কোনো লালন গবেষক মনে করেন, লালন কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার চাপড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত ভাঁড়ারা গ্রামে জন্মেছিলেন। আবার কারো মতে লালনের জন্ম যশোর জেলার ফুলবাড়ী গ্রামে । কুষ্টিয়ার লালন মাজার: কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলার ছোঁউড়িয়াতে বাউল সম্রাট লালন ফকিরের একটা মাজার রয়েছে।তোঁর মৃত্যুর পরে তাঁর শিষ্যরা এখানে মাজার গড়ে তোলেন।মাজারটি বাউলদের একটা তীর্থস্থান। প্রতি বছর লালন ফকিরের মৃত্যু বার্ষিকিতে এখানে সবচে বড় সমআরৎসব হয়। দেশে বিদেশের বাউল ভক্তরা এখানে আসেন। মাজোরের পাশে রয়েছে লালন মিউজিয়াম।মাজারটি কুমারখালি উপজেলাতে হলেও এটি কুষ্টিয়া শহর সংলগ্ন শহরতলী এলাকায়।(তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট)
- লালন সম্পর্কে আমি বিগত ১৬.১০.২০১৬ তারিখে লালন স্মরোৎসবে যে প্রতিবেদনটি লিখেছিলাম সে সন্মন্ধে জানতে নিচের ফাইলটিকে ক্লিক করুন।
- স্মরণোৎসবে বাউল সম্রাট লালন কে জানুন ১৬ অক্টোবর ২০১৬
- শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি, কুষ্টিয়া: রবীন্দ্রস্মৃতি-বিজড়িত একটি ঐতিহাসিক স্থান ও পর্যটনকেন্দ্র। বর্তমান কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলাধীন পদ্মার দক্ষিণ তীরে জেলা সদর থেকে পাঁচ মাইল উত্তরে গড়াই নদী পেরিয়ে এবং আরও উত্তরে পদ্মা নদীর অপর পাড়ের পাবনা শহরের বিপরীতে এর অবস্থান। বিরাহিমপুর জমিদারির সদর কাচারি ও জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের ঐতিহাসিক কুঠিবাড়ির জন্যও শিলাইদহ বিখ্যাত। শিলাইদহ নামটি আধুনিক, আগে এ স্থানটি খোরশেদপুর নামে পরিচিত ছিল। উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে জোঁড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবার এই গ্রামটি কিনে নেওয়ার আগে এখানে একটি নীলকুঠি ছিল। শেলী নামের একজন নীলকর এটি নির্মাণ করেছিলেন বলে জানা যায়। গড়াই এবং পদ্মা নদীর মিলিত প্রবাহের ফলে সৃষ্ট গভীর একটি ‘দহ’ (ঘূর্ণিস্রোত) থেকে গ্রামটি শেলী-দহ নামে পরিচিতি লাভ করেছিল। কালক্রমে তা শিলাইদহ-এ পরিণত হয়। ১৮০৭ সালে রামলোচন ঠাকুরের উইলসূত্রে রবীন্দ্রনাথের পিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর এ জমিদারির মালিক হন। রবীন্দ্রনাথ জমিদারি দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়ে প্রথম শিলাইদহে আসেন ১৮৮৯ সালের নভেম্বর মাসে।জমিদারির দেখাশোনা করতে রবি ঠাকুর কৈশোরে এবং তার পরবর্তীকালেও মাঝে মাঝে এখানে আসতেন এবং এই কুঠিবাড়িতেই থাকতেন। তবে পরবর্তীকালে বন্যার সময় পদ্মার ভাঙ্গনে পুরানো কুঠিবাড়ির নিকটবর্তী এলাকা পর্যন্ত বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে এই পুরানো কুঠিবাড়িটি ভেঙ্গে ফেলা হয় এবং পুরানো ভবন সামগ্রী দিয়েই নতুন কুঠিবাড়িটি নির্মাণ করা হয়। ১৮৯১ থেকে ১৯০১ সালের মধ্যে একদশকেরও বেশি সময় রবীন্দ্রনাথ অনিয়মিত বিরতিতে এখানে অবস্থান করেছেন। এই কুঠিবাড়ি ও পদ্মা বোটে বসে রচিত হয় রবীন্দ্রসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফসল সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালী, কথা ও কাহিনী, ক্ষণিকা, নৈবেদ্য ও খেয়ার অধিকাংশ কবিতা, পদ্মাপর্বের গল্প, নাটক, উপন্যাস, পত্রাবলী এবং গীতাঞ্জলি ও গীতিমাল্যের গান। এখানে বসেই কবি ১৯১২ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যের ইংরেজি অনুবাদ শুরু করেন, যা তাঁকে ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কারের সম্মান এনে দেয়। শিলাইদহ ও পদ্মার প্রতি রবীন্দ্রনাথের ছিল গভীর অনুরাগ, ছিন্নপত্রাবলীতে এর পরিচয় আছে। কবি একটি চিঠিতে লিখেছেন: ‘আমার যৌবন ও প্রৌঢ় বয়সের সাহিত্যরস-সাধনার তীর্থস্থান ছিল পদ্মা-প্রবাহচুম্বিত শিলাইদহ পল্লীতে’শিলাইদহ কুঠিবাড়ি আম, কাঁঠাল ও অন্যান্য চিরসবুজ বৃক্ষের বাগান, একটি পুষ্পোদ্যান এবং দুটি পুকুরসহ প্রায় ১১ একর মনোরম এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। শিলাইদহে রয়েছে গ্রামীণ পরিবেশ আর মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। কুঠিবাড়ি ভবনটি একটি বেষ্টনী প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। দক্ষিণ দিকে অবস্থিত একটি সাধারণ অথচ আকর্ষণীয় প্রবেশ তোরণ পেরিয়ে এতে প্রবেশ করা যায়। নিচতলা ও দোতলায় বিশাল কেন্দ্রীয় হলকক্ষসহ এতে বিভিন্ন আকারের মোট ১৫টি কক্ষ রয়েছে। নিচতলা ও দোতলার উন্মুক্ত ব্যালকনিগুলি রানীগঞ্জ টালি দিয়ে তৈরি ঢালু ছাদ দ্বারা আংশিক আচ্ছাদিত। নিচতলার উপরের মধ্যবর্তী অংশে রয়েছে ত্রিকোণ প্রান্ত বিশিষ্ট একটি ঢালু ছাদ। দোতলার ওপরের পিরামিড আকৃতির ছাদ ভবনটিকে আরও বৈচিত্র্য এনে দিয়েছে। বর্তমানে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি সংরক্ষিত একটি জাতীয় ইমারত। সরকারি উদ্যোগে এখানে ‘ঠাকুর স্মৃতি জাদুঘর’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।ভ্রমণ পিয়াসী নরনারী এখানে বেড়াতে আসতে পারেন। ক্ষণিকের জন্যে হলে এখানে এসে আপনার মন ভাল হয়ে যাবে।(তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট)
-
বিগত ০৮ মে, ২০১৭ তারখে কবি গুরুর ১৫৬তম জন্ম জয়ন্তীতে “হৃদয়ে রবি ঠাকুর এবং স্মৃতিতে শিলাইদহের রবীন্দ্র কুঠি” শিরোনামে স্মৃতিচারণমূলক প্রতিবেদনটি দেখার জন্যে নিচের ওয়ার্ড ফাইলটি দেখুন।
- ১৭ হৃদয়ে রবি ঠাকুর ০৮ মে ২০১৭
- কুষ্টিয়াই শ্রেষ্ঠ জেলা:
- কুষ্টিয়াই শ্রেষ্ঠ জেলা জাতিসংঘের তত্বাবধানে দেশীয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গবেষণা ও পরিসংখ্যানে জানা গেছে, বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে , কুষ্টিয়া জেলা, সব বিবেচনায় সবার উপরে।কুষ্টিয়ার আবহাওয়া অত্যন্ত সুন্দর । এখানে যেমন কনকনে শীত অনুভুত হয় না , আবার তীব্র গরমও পড়ে না । এখানকার ভুমি উর্বরা সমতল এবং বন্যা , খরা , জলোচ্ছ্বাস এখানে নেই । মানুষের জীবনযাত্রার মান তুলনামুলক উন্নত , শিক্ষিতের হার ভালো , এখানকার ভাষা সবচেয়ে সুন্দর এবং কুষ্টিয়াকে সাংস্কৃতিক রাজধানী বলা হয় । কুষ্টিয়ার মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো এবং দেশের মধ্যে , এখানকার মানুষ সবচেয়ে সুখী ।আর সব বিবেচনায় দেশের মধ্যে , কুষ্টিয়াই শ্রেষ্ঠ জেলা।
- (তথ্য সূত্র: বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও জেলা তথ্য বাতায়ন হতে সংগৃহীত)